রান্নাবাড়ায় মনে রাখুন
Written By Jibon Islam on Wednesday, August 24, 2016 | 3:28 AM
গৃহিণী হোক কিংবা চাকরিজীবী, মহিলাদের রেহাই নেই রান্নাবান্নার হাত থেকে। তবে রান্নাকে বাড়তি ঝামেলা মনে করেন খুব কম মহিলাই। ভালোবেসেই পরিবারের সদস্যদের জন্য রান্না করেন তাঁদের পছন্দমতো খাবার এবং তা খাইয়ে তৃপ্তিও পান বেশিরভাগ মহিলারাই। তবে রোজকার রান্না বান্নায় হয়ে যেতে পারে কিছু ভুলচুক যা খুবই স্বাভাবিক। তাই এসব কথা মাথায় রেখেই আজকে রান্না সম্পর্কিত কিছু টিপস দেয়া হলো যা রাঁধুনিদের কাজে লাগবে।
পায়েস রান্নায়
খেজুরের গুড়ের পায়েস কে না পছন্দ করে। কিন্তু দেখা যায় খেজুরের গুড় দিয়ে পায়েস রান্না করার সময় দুধ ফেটে যায়, জমাট বাধে না। এই অবস্থায় কি আর পায়েস রান্না জমে! তাই চুলায় দুধ জাল দেয়ার সময় দুধ ঘন হয়ে গেলে তা নামিয়ে ঠাণ্ডা করে তারপর গুড় মেশাবেন, গরম থাকতেই গুড় দিবেন না। তারপর ভালো করে নেড়ে আবার কিছুক্ষণ দুধটা ফুটিয়ে নিবেন। দেখবেন কি চমৎকার ঘ্রাণ বের হচ্ছে আর রঙটাও হয়েছে সুন্দর।
সেমাই রান্নায়
সেমাই রান্না করতে গেলে সেমাই অনেক সময় ভেঙ্গে যায় বা গলে যায় ফলে সেমাইয়ের আসল স্বাদটাই আর পাওয়া যায় না। তাই সেমাই রান্নার আগে তা তেলে বা ঘিতে হালকা ভেজে ঝরঝরে করে নিন তাহলে একেবারেই ভাঙবে না বা গলে যাবে না।
কেক বেকিং করতে
কেক বেকিং করার জন্য ডিমের ব্যবহার বাধ্যতামূলক। মূলত ডিমই কেকে স্বাদ আনে, এটা কেকের অন্যতম উপাদানও বটে। কিন্তু অনেক সময় এমন হয় যে বাসায় বেশি ডিম নেই কিন্তু কেক খেতেও খুব ইচ্ছা করছে। এমন সময় কি করা যায়! চিন্তা নেই, কেক বানানোর সময় পর্যাপ্ত ডিম না থাকলে কর্ণফ্লাওয়ার ব্যবহার করবেন। এটা ডিমের কাজটাই করে।
কচু বা কচুশাক রান্নায়
অনেকেই আছেন বলেন যে ওল, কচুশাক আমার খুব প্রিয় কিন্তু খেলেই গলা চুলকায় বলে সাধ থাকলেও খেতে পারিনা। তাহলে কি করা যায়! গলা চুলকানোর ভয়ে এতো মজার খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে! না একদমই না, আপনি যা করবেন তা হলো- ওল, কচু বা কচুশাক রান্না করার সময় তেঁতুল ছেড়ে দিবেন আর যখন রান্নার পর খেতে বসবেন তখন তার উপর কিছুটা লেবুর রস চিপে নিবেন। ব্যস, হয়ে গেলো! গলা চুলকানোর আর কোনো ভয় নেই এখন।
লবণ বেশি হয়ে গেলে
তাড়াহুড়ায় রান্না করতে গেলে যে ভুলটা খুব হয় তা হলো তরকারিতে লবণ বেশি হয়ে যাওয়া। মাছমাংস বা তরকারিতে লবণ কম হলে তাও না হয় কাঁচা লবণ নিয়ে খাওয়া যায় কিন্তু লবণটা বেশি হয়ে গেলে কি উপায়! চিন্তা করবেন না, এই সমস্যারও সমাধান আছে। রান্নায় লবণ বেশি হয়ে গেলে কোনো টক কিছু দিয়ে দিবেন বা চিনি দিতে পারেন এতে করে খাবারের লবণাক্ত ভাব কমে যাবে। আর তারপরও যদি না কমে তাহলে তরকারিতে কিছু সেদ্ধ আলু ছেড়ে দিলেও লবণ কমে যাবে।
মাছ ভাজার সময়
মাছ ভাজার সময় তেল ছিটকে এসে গায়ে পরা বা হাত পুড়ে যাওয়ার ঘটনা নৈমিত্তিক। কিন্তু মাছ না ভেজে খাওয়াও তো যায় না। তাই মাছ ভাজার সময় সাবধানতার জন্য আগেই একটু তেলের মধ্যে লবণ ছিটিয়ে নিবেন। তাহলে আর তেল ছিটকে এসে হাত পুড়ে যাওয়ার ভয় থাকবেনা।
মাংস সেদ্ধতে
গরুর মাংস, মুরগির মাংস বা কলিজা রান্না করার সময় যেই ঝামেলাটা হয় তা হলো সহজে সেদ্ধ হতে চায় না। সবার বাসায় আবার প্রেসার কুকারও থাকেনা। এই রকম সমস্যায় আপনি যা করতে পারেন তা হলো মাংস রান্না করার সময় তাতে ১ টেবিল চামচ সিরকা দিবেন। এতে মাংস তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হবে এবং মাংসের উগ্র গন্ধটাও দূর হবে।
পেঁয়াজ বেরেস্তা
পোলাও খাবেন আর তাতে পেঁয়াজ বেরেস্তা ছড়ানো থাকবেনা তা কেমন করে হয়। লালচে পেঁয়াজ বেরেস্তা যেন পোলাওয়ের চেহারাটাই পাল্টে দেয়। তাই ঝটপট পেঁয়াজ বেরেস্তা লালচে করে ভাজার জন্য এতে সামান্য চিনি ছিটিয়ে দিন, তাড়াতাড়ি লালচে হয়ে ভাজবে।
ঘন স্যুপ
বাজারে বিভিন্ন রেডিমেট মুখরোচক স্যুপ পাওয়া যায় ঠিকই কিন্তু অনেকেই বাসায় তৈরি স্যুপ খেতে পছন্দ করেন। তবে তাড়াহুড়ায় দেখা যায় স্যুপ ঘন না হয়ে পাতলা পানি পানি হয়ে যায়। এরকম হলে যা করতে হবে তা হলো দুটো সেদ্ধ আলু ম্যাশ করে স্যুপের সাথে মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। দেখবেন স্যুপ আর পাতলা নেই। বেশ ঘন হয়ে রান্না হয়েছে।
রান্নার সময় প্রয়োজনীয় জিনিস হাতের কাছে পাওয়া যায় না অনেক সময় তাই মশলাপাতি তাড়াতাড়ি খুঁজে পেতে কৌটারjavascript:; গায়ে নাম লিখে রাখতে পারেন তাহলে আর খোঁজ করতে হবেনা। তাড়াহুড়ায় কোনো কিছুই ভালো হয়না, বিশেষ করে রান্নার কাজ তো আরও না। তাই কালকে কী রান্না করবেন তা আগের রাতেই ঠিকঠাক করে রাখুন ও সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিন, দেখে নিন সব মশলা আছে কিনা, বাটার জন্য কিছু লাগবে কিনা। আগের থেকে সব ঠিক করে রাখলে অল্প সময়ে রান্না করা যাবে।
Post a Comment